নামহট্ট বিভাগ

নামহট্ট বিভাগ

গৃহাভ্যন্তরকে সুখময় করে তুলতে হলে পরিবারে সকলে মিলে সকাল ও সন্ধ্যায় একত্রে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করা উচিত। শ্রীমদ্ভাগবতম, শ্রীমদ্ভগবদগীতা, ভগবৎতত্ত্ব সমন্বিত গ্রন্থাদি পাঠ করা উচিত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদিত প্রসাদ গ্রহণ করা উচিত।    -শ্রীল প্রভুপাদ।

শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর নামহট্ট

নদীয়া গোদ্রুমে নিত্যানন্দ মহাজন।

পাতিয়াছে নামহট্ট জীবের কারণ॥

সংসারে আবদ্ধ, মায়াছন্ন, কলহিত পতিত জীবের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে ব্রজের বলরাম, কলিযুগের নিত্যানন্দ প্রভুই নদীয়া গোদ্রুম দ্বীপের সুরভীকুঞ্জে নামহট্ট প্রচার প্রবর্তন করেন। যাতে নামহট্টের মাধ্যমে বদ্ধ জীব আপন আলয় ভগবদ্ধামে ফিরে যেতে পারে। গৃহে থেকে কিভাবে কৃষ্ণভক্তি অনুশীলন করতে হয় সেই শিক্ষা নগর, গ্রামের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য ইসকনের অন্যতম একটি বিভাগ হলো শ্রীশ্রী হরেকৃষ্ণ নামহট্ট।

নামহট্টের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রমসমূহ-

১। কলিযুগে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু প্রবর্তিত হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ কীর্তন ব্যাতিত অন্য কোনো উপায়ে জাগতিক ও পারমার্থিক উন্নতি সম্ভব নয়, এই শিক্ষা তুলে ধরার জন্য দেশের প্রতিটি নগর ও গ্রামে নামহট্ট সংঘ গড়ে তোলা ।

২। বাংলাদেশের নামহট্ট প্রচারকে আরো প্রসারিত করার জন্য ইসকন হরেকৃষ্ণ নামহট্ট জাতীয় পরিচালনা কমিটি গঠন।

৩। অন্ধবিশ্বাস, কুসংঙ্কার, ধর্মের নামে একগুয়েমি থেকে মুক্ত হয়ে কিভাবে রাধাগোবিন্দের সেবার মাধ্যমে দিব্য সংসার গঠন করা যায়, সেই শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্য জেলা প্রচারক নিয়োগ।

৪। প্রতিটি নগর, গ্রাম, মহল্লায় হরিনামের জয়ধ্বনি, তুলসি আরতি, শ্রীগৌরসুন্দরের আরতি কীর্তন ও বৈষ্ণব শিক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেক জেলায় নামহট্ট প্যাকেজ প্রোগাম ও শ্রদ্ধা কুটির গড়ে তোলা।

৫। যারা ভগবানের নাম প্রচারের জন্য অর্থ দান করতে চায়, সে সমস্ত সৌভাগ্যবানদের অর্থ ভগবানের সেবায় ব্যাবহার করার জন্য মাসিক নামহট্ট সেবা প্রকল্প চালু।

৬। নবদ্বীপ ধাম ও গৌড়মণ্ডল পরিক্রমায় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে ধামের কৃপা লাভ তথা ধামের সেবায় যুক্ত হয়ে মানব জীবনকে ধন্য করা।

৭। নামহট্ট প্রচার দলের মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জের বৃহত্তর গৃহস্থ জনগোষ্ঠিকে কৃষ্ণভাবনার আলোকে গড়ে তোলা।

৮। নামহট্ট জেলা, জেলা সম্মেলন, সাপ্তাহিক নামহট্ট শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষাসফর, প্রতিটি বাড়ী এবং প্রতিটি ঘর মন্দিরে পরিণত করা ।

৯। শ্রীল প্রভুপাদের অপ্রাকৃত গ্রন্থ বিতরণের মাধ্যমে নামহট্ট প্রচারকে আরও সম্প্রসারিত করা।

ইসকন শ্রীশ্রী হরেকৃষ্ণ নামহট্ট

বাংলাদেশে নামহট্ট প্রচার

বাংলাদেশে নামহট্ট প্রচার ধারাকে শক্তিশালী  ও বেগবান করার জন্য নামহট্টের বিশ্ব প্রচার ও ইসকন, জি বি সি ও দীক্ষাগুরু– শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ ২০১২ সালের ১৬ নভেম্বর স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরের নিকটে ৩৫, তনুগঞ্জ লেন (লোহার পুল) সূত্রাপুরের, শ্রীশ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দিরে বাংলাদেশ কেন্দ্রিয় নামহট্টের শুভ উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন । কেন্দ্রিয় নামহট্ট কার্যালয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রায় অনুষ্ঠানগুলোই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। পাশাপাশি ইসকন, স্বামীবাগেও শাখা নামহট্ট কার্যালয়ের মাধ্যমে নামহট্ট প্রচারে সহায়ক ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় নামহট্টের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশনকৃত চারশতেরও বেশি নামহট্ট রয়েছে। রেজিষ্ট্রেশন ছাড়াও নামহট্ট শদ্ধা কুটির নামে পরিচিত বহু সংঘ নগর গ্রামে বিরাজমান।

নিতাই পদ কমল     কোটি চন্দ্র সুশীতল

যে ছায়ায় জগত জুড়ায়।

হেন নিতাই বিনে ভাই রাধাকৃষ্ণ পাইতে নাই।

দৃঢ় করি ধর নিতাইর পায় ॥

শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের সেবা লাভ করার জন্য নিত্যানন্দ প্রভুর কৃপা প্রয়োজন। আর এই কৃপা লাভ করার জন্য সকলের নামহট্ট প্রচার করা একান্ত কর্তব্য।

নামহট্ট সম্বন্ধে আচার্যদের উক্তি-

আমরা আশা করছি যে, নামহট্টের বিষয়বস্তু সব রকম প্রচারের থেকে শ্রেষ্ঠ ও সর্বাপেক্ষা উপযোগী ও প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তুতে রূপান্তরিত হবে । শ্রীমৎ গৌরাঙ্গ সম্প্রদায়ে যে সব মিথ্যা পদাদি প্রবেশ করেছে তা শ্রীঘ্রই অন্তর্হিত হবে এবং অবশেষে শুদ্ধ হরিনামের জয়পতাকা সমগ্র পৃথিবীতে আন্দোলিত হবে। -শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর।

মুদ্রণ কেন্দ্র (ছাপাখানা) স্থাপন করে শাস্ত্রাদি বিতরণ করে এবং নামহট্টের প্রসার করে প্রত্যেকে সুন্দরভাবে শ্রীধাম মায়াপুরের সেবা করতে পারেন। আমি যখন এই শরীরে বর্তমান থাকব না তখনও আপনারা মায়াপুরের সেবা করবেন। সেটাই আমার হৃদয়ে একান্ত বাসনা।

-শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর।

বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ করুন

ইস্কন হরেকৃষ্ণ নামহট্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও শ্রীশ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দির ৩৫ তনুগঞ্জ লেন, সুত্রাপুর, ঢাকা-১১০০

শাখা কার্যালয়: ৭৯, স্বামীবাগ রোড, স্বামীবাগ আশ্রম, গেণ্ডারিয়া, ঢাকা-১১০০

মোবাইল: ০১৭৩০০৫৯২০১, ০১৭১৪২০২০৭২